দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি || Double Entry System
দূতরফা দাখিলা পদ্ধতি কি? দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির জনক কে? দুতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাবের বই কয়টি ও কি কি? দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাব কয় প্রকার? হিসাবচক্র কি? হিসাব চক্রের ধাপ কয়টি ও কি কি? দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির মূলনীতি কয়টি ও কি কি?

দূতরফা দাখিলা পদ্ধতি কি?
হিসাবের আধুনিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক "দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি" অনুযায়ী প্রত্যেকটি লেনদেন কে দুইটি হিসাবে লিখতে হয়। যার একটি সুবিধা গ্রহীতা ও অন্যটি সুবিধা দাতা। সুবিধা গ্রহীতাকে ডেবিট (Debit) এবং সুবিধা দাতাকে ক্রেডিট (Credit) লিখতে হয়। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ডেবিট টাকার অঙ্ক লিখার জন্য সমান টাকার অঙ্ক ক্রেডিট লিখতে হয়। ফলে বছরের যে কোনো সময় হিসাবের মোট ডেবিট টাকা ও মোট ক্রেডিট টাকা সমান হয়। একেই দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি বলে।
দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে সকল প্রকার লেনদেন লিবপিবদ্ধ করতে ডেবিট/ক্রেডিট নির্ণয় করতে হয়।
*ডেবিট (Debit) মানে সুবিধা গ্রহীতা
*ক্রেডিট (Credit) মানে সুবিধা দাতা
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির জনক কে?
১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে হিসাব বিজ্ঞানের জনক লুকা প্যাসিওলি (Luca Pacioli) আর্থিক লেনদেন সমূহের হিসাব সঠিক ও সুষ্ঠভাবে নির্ণয়ের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক এই "দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি" ব্যাখ্যা করে 'সুম্মা ডি এরিথমেটিকা জিওমেট্রিয়া প্রপোরশনিয়েট প্রপোরশনালিটা' নামে একটি বই লিখেন।
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতির মূলনীতি কয়টি ও কি কি?
১। দ্বৈত সত্তাঃ
প্রতিটি লেনদেনে কমপক্ষে দুটি হিসাব থাকে। ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করার পূর্বে প্রতিটি লেনদেনে জড়িত হিসাবখাতসমূহ বের করে তাদের প্রত্যেকটি কোন শ্রেণির হিসাব তা নিরূপণ করতে হয়। তারপর দুতরফা দাখিলা অনুযায়ী প্রতিটি হিসাবের ডেবিট ও ক্রেডিট নির্ণয় করতে হয়।
২। দাতা ও গ্রহীতাঃ
প্রতিটি লেনদেনে সুবিধা গ্রহণকারী গ্রহীতা ও সুবিধা প্রদানকারী দাতা হিসেবে কাজ করে।
৩। ডেবিট ও ক্রেডিট করাঃ
সুবিধা গ্রহণকারী হিসাবকে ডেবিট ও সুবিধা প্রদানকারী হিসাবকে ক্রেডিট করা হয়।
৪। সমান অঙ্কের আদান-প্রদানঃ
প্রতিটি লেনদেনের ডেবিট ও ক্রেডিট টাকার পরিমাণ সমান হবে।
৫। সামগ্রিক ফলাফলঃ
যেহেতু প্রতিটি লেনদেন ডেবিট-ক্রেডিট বিশ্লেষণ করে সমপরিমাণ টাকার অঙ্ক দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয়, সেহেতু সামগ্রিক ফলাফল নির্ণয় সহজ হয়। মোট লেনদেনের ডেবিট দিকের যোগফল ক্রেডিট দিকের যোগফলের সমান হয়।
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাবের বই কয়টি ও কি কি?
দুতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে প্রধান হিসাবের বই ২ প্রকার।
১. জাবেদা বই (Journal)
২. খতিয়ান বই (Leder)
দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাব কয় প্রকার?
দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে হিসাব ৫ প্রকার।
১. ব্যয়
২. সম্পদ
৩. আয়
৪. দায়
৫. মালিকানা সত্ত্ব।
হিসাবচক্র কি?
দূতরফা দাখিলা পদ্ধতিতে কোন একটি হিসাব কালের শেষ দিনের সম্পদ, দায় ও মালিকানা স্বত্ব হিসাবের উদ্বৃত্ত দিয়ে পরবর্তী বছরের হিসাব কাল শুরু হয়। নতুন বছরেও ঐ একই কার্যক্রম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চক্রাকারে চলতে থাকে। এভাবে যে ক্রম বা ধারাবাহিকতায় হিসাববিজ্ঞান প্রক্রিয়ার কার্যক্রম সম্পাদিত হয় তাকেই হিসাব চক্র বলে।
হিসাব চক্রের ধাপ কয়টি ও কি কি?
আধুনিক হিসাববিজ্ঞানীদের মতে যে কয়টি ধাপ চক্রাকারে আবর্তিত হয় তা নিচে দেয়া হলো।
১। লেনদেন চিহ্নিতকরণ
২। লেনদেন বিশ্লেষণ
৩। জাবেদা বা লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ
৪। খতিয়ান বা শ্রেণীবিন্যাসকরণ
৫। রেওয়ামিল বা সংক্ষিপ্তকরণ
৬। সমন্বয় জাবেদা
৭। সমন্বিত রেওয়ামিল
৮। কার্যপত্র (ঐচ্ছিক)
৯। আর্থিক বিবরণী প্রস্তুতকরণ
১০। সমাপনী দাখিলা
১১। সমাপনী উত্তর রেওয়ামিল
১২। বিপরীত দাখিলা (ঐচ্ছিক)
Commerce Clan এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url