লেনদেন || Transaction

লেনদেন কি? লেনদেন কাকে বলে? লেনদেন ইংরেজী প্রতিশব্দ কি? আর্থিক লেনদেন কি? লেনদেনের উৎস কি? সকল লেনদেন ঘটনা, কিন্তু সকল ঘটনা লেনদেন নয় কেনো? লেনদেনের পক্ষ কয়টি ও কি কি? লেনদেনের বৈশিষ্ট্য কয়টি? লেনদেন কয় প্রকার ও কি কি?

লেনদেন কি?

হিসাবের মূল বা মৌলিক উপাদান লেনদেন । লেনদেন অর্থ নেয়া-দেয়া / গ্রহণ-দান / আদান-প্রদান / নেওয়া-দেওয়া ।

লেনদেন কাকে বলে?

সাধারণত কোনো কিছু দেওয়া বা নেওয়াই হলো লেনদেন তবে ব্যবসায়ের দৃষ্টিতে অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য কোনো ঘটনার মাধ্যমে কারবার/ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে ঐ ঘটনাকে লেনদেন বলে।

ভোক্তারা টাকা দিয়ে পণ্য বা সেবা নেন এবং ব্যবসায়ীরা সেবা বা পণ্য দিয়ে টাকা নেন।

লেনদেন ইংরেজী প্রতিশব্দ কি?

লেনদেন ইংরেজী প্রতিশব্দ হলো “Transaction”।

আর্থিক লেনদেন কি?

হিসাববিজ্ঞানের ভাষায় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে অর্থের বিনিময়ে কোনো পণ্য বা সেবা আদান-প্রদান কে লেনদেন বলা হয়। যার ফলে ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার (সম্পদ=দায়+মালিকানা স্বত্ব)পরিবর্তন হয়।

লেনদেনের উৎস কি?

লেনদেনের উৎস হলো আর্থিক ঘটনা যেমন- পণ্য ক্রয় ২০০০০ টাকা, দোকানের ভাড়া প্রদান ৫০০০ টাকা, কর্মচারীর বেতন প্রদান ৫০০০ টাকা এগুলো সবগুলোই আর্থিক ঘটনা। আর এসব ঘটনাই থেকে লেনদেন সৃষ্টি হয়। তবে সব ঘটনা থেকে লেনদেন সৃষ্টি হয় না। যেমন- ১০০০০ টাকার পণ্য ক্রয়ের অর্ডার বা ফরমায়েশ দেয়া, ৫০০০ টাকা বেতনে কর্মচারী নিয়োগ দেয়া এসকল ঘটনায় অর্থের কোন পরিবর্তন হয় না তাই এসকল ঘটনাকে লেনদেন বলা যাবে না। 

সকল লেনদেন ঘটনা, কিন্তু সকল ঘটনা লেনদেন নয় কেনো?

যে সকল ঘটনা ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটায় সেগুলোই লেনদেন। অন্যদিকে যেসকল ঘটনা ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটায় না সেগুলোকে লেনদেন বলা যাবে না। তাই বলা যায়, "সকল লেনদেনই ঘটনা কিন্তু সকল ঘটনা লেনদেন নয়।"


লেনদেনের পক্ষ কয়টি ও কি কি?

প্রত্যেক লেনদেনে দুইটি পক্ষ থাকে।

১. অপর পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করে > ডেবিট 

২. এক পক্ষ সুবিধা প্রদান করে > ক্রেডিট

যেমনঃ অফিসের বেতন প্রদান ৫০০০ টাকা। এখানে বেতন দেওয়ার ফলে ব্যবসায়ের নগদ টাকা কমেছে মানে আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে , এক পক্ষ বেতন প্রদান করেছে আরেক পক্ষ গ্রহণ করেছে তাই এটি একটি লেনদেন।

লেনদেনের বৈশিষ্ট্য কয়টি?

১. আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন।

ক. পরিমাণগত বা নিট পরিবর্তন।
খ. কাঠামোগত বা গুনগত পরিবর্তনঃ

২. অর্থের মাপকাঠিতে পরিমাপযোগ্য।

৩. দ্বৈতসত্তা বা দুটি পক্ষ।

৪.  স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও স্বতন্ত্রতা।

৫. লেনদেনের দৃশ্যমানতা।

৬. ঐতিহাসিক ঘটনা।

৭. হিসাব সমীকরণে প্রভাব ফেলা।

লেনদেন কয় প্রকার ও কি কি?

লেনদেনকে অনেক ভাবেই শ্রেণি বিন্যাস করা যায়। আমরা আজকে সুবিধা পাওয়ার সময়কাল বা উপযোগিতা বিবেচনায় লেনদেন এর শ্রেণি আলোচনা করব।

উপযোগিতার ভিত্তিতে লেনদেন কয় প্রকার?

উপযোগিতার ভিত্তিতে লেনদেন ২ প্রকার । যথাঃ

১. মূলধন জাতীয় লেনদেন
২. মুনাফা জাতীয় লেনদেন

১) মূলধনজাতীয় লেনদেনঃ 

যেসকল লেনদেনের সুবিধা দীর্ঘকাল যাবত ভোগ করা যায় তাকে মূলধনজাতীয় লেনদেন বলে। মূলধনজাতীয় লেনদেন সাধারনত অনেক বড় অংকের টাকায় হয় এবং অনিয়মিত হয় ।

মূলধনজাতীয় লেনদেন এর সাথে স্থায়ী সম্পদ , দীর্ঘমেয়াদি দায় ও মূলধন জড়িত থাকে।

কিছু মূলধনজাতীয় লেনদেনের উদাহরণঃ
আসবাবপত্র ক্রয় ৩০০০০ টাকা।
যন্ত্রপাতি বিক্রয় ২০০০০ টাকা।
নিজ অথবা অন্যের বব্যসায়ে বিনিয়োগ ৪০০০ টাকা।
শেয়ার ক্রয় অথবা বিক্রয় ৬০০০০ টাকা।
ব্যবসায়ের জন্য টিভি , ফ্রিজ ক্রয় ৮০০০০ টাকা।

২)মুনাফাজাতীয় লেনদেনঃ 

যেসকল লেনদেনের সুবিধা সাধারণত স্বল্পমেয়াদি হয় এবং কমসময়ের জন্যে ভোগ করা যায় তাকে মুনাফাজাতীয় লেনদেন বলে। মুনাফাজাতীয় লেনদেন সাধারনত কম টাকার হয় ও নিয়মিত হয়।

মুনাফাজাতীয় লেনদেন এর সাথে আয়-ব্যয় ,চলতি সম্পদ , চলতি দায় ও উত্তোলন জড়িত থাকে ।

কিছু মূলধনজাতীয় লেনদেনের উদাহরণঃ
নগদে পণ্য ক্রয় ৪০০০ টাকা।
ধারে পণ্য বিক্রয় ৫০০০ টাকা।
ব্যবসায় হতে উত্তোলন ২০০০০ টাকা।
বেতন প্রদান ৩০০০ টাকা।
কমিশন প্রাপ্তি ৫০০ টাকা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Commerce Clan এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url